আর্টিকেলটির ১ম খণ্ড পড়তে ক্লিক করুন

**একটা সিম্পল রুটিন করতে পারেন, এতে আপনার মনে হবে না যে পিছিয়ে পড়ছেন কারণ সবকিছুই একবার একবার করে প্রতিদিন টাচ করা হবে। আবার প্রতিদিনে বেশী সময় দেয়া লাগবে না বলে এটা ঘাড়েও চেপে বসবে না। একদিনে বেশী প্রেশার নেয়ার থেকে প্রতিদিন নিয়ম করে সময় দেয়ার চেষ্টা করুন। এটাই বেশী ফলপ্রসূ।

একটা নমুনা রুটিন হতে পারে এমনঃ

Painless GRE (android app) – 1 session of vocabulary (takes around 10 minutes)
Arco/Kaplan writing – 1 issue, 1 argument – 10 minutes
1 article from Washington Post – 10 minutes
1 chapter on verbal from any book – 1 hour
GRE Big Book – 1 Model Question (Text Completion and Reading Comprehension) – 1 hour
1 chapter on quant from any book – 1 hour
TOEFL – any section per day from any book or software (Reading/Listening/Speaking/Writing) – 1 hour

এই রুটিনটার ব্যাপার হল এই যে, সব মিলিয়ে সময় লাগছে সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মত, এবং টাচ করা হচ্ছে জিআরই এর সবগুলো সেকশন, সেই সাথে টোফেলের একটা সেকশন। সকালে আর রাতে দুই ভাগ করে নিলে কষ্টটাও অর্ধেক হয়ে যাবে। কেউ যদি একটু কষ্ট করে এটা মাস দুয়েক ফলো করতে পারে, আশা করা যায় অনেক দুর্বলতাই কাটিয়ে উঠতে পারবে এবং একটা বেশ ভালো প্রিপারেশন হয়ে যাবে। আর রুটিনটা এতই সহজ যে অন্য কোন কাজকর্মই তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
তবে এটাই যে সবার জন্য খুব সুবিধেজনক হবে তা দাবী করা যায় না। কাজেই সে নিজের সুবিধেমত কাটছাঁট করতে পারে। মূল পয়েন্ট হল এই যে, প্রতিদিন নিয়ম করে সময় দিতে হবে।

**এত স্কোর করতে হলে আমাকে কী করতে হবে? ধরুন ৩৩০+?

স্কোরের টার্গেট থাকবে ঠিকই, কিন্তু পরীক্ষা চলাকালীন পুরো মনোযোগ রাখবেন প্রবলেম সলভ করার দিকে, স্কোরের দিকে নয়। স্কোর কমে যাচ্ছে, বেড়ে যাচ্ছে – এ জাতীয় চিন্তা ক্ষতিই করবে। স্কোর কী আসবে তা তো দেখতেই পাবেন। রিয়েল পরীক্ষার সময় যদি স্কোর নিয়ে ভাবতে থাকেন, তবে সেটি হবে নিজের পায়ে কুড়াল মারার মত।

আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড, প্রস্তুতির আন্তরিকতা, পরিশ্রম, সময় দেয়া, প্র্যাকটিসের ধরণ এবং নিয়মতান্ত্রিকতা – এসবের ওপর স্কোর নির্ভর করে। আগে কাঙ্ক্ষিত স্কোর ঠিক করে তারপর প্রস্তুতি শুরু করা অনেকটা আগেই অপরাধী কে তা ঠিক করে ইনভেস্টিগেশনে নামার মত। প্রিপারেশন নিতে নিতেই বুঝতে পারবেন কেমন স্কোর আসা উচিৎ।

রুটিনড লাইফ এবং কাজকর্ম সম্পর্কে কিছু কথাঃ

রুটিনড লাইফের একটা দিক হল এই যে, রুটিনড লাইফ শুরু করা যতটাই সহজ, এটি মেইনটেইন করা ততটাই কঠিন। অনেকেই শুরু করে, কিন্তু ধরে রাখতে পারে না। এখানেই মানসিক শক্তির পরিচয়।

একটু মাথা খাটিয়ে, আণ্ডারগ্র্যাড লেভেলের একজন গড়পড়তা স্টুডেন্টের ম্যাচিউরিটি দিয়েই নিজের সমস্যা বিশ্লেষণ করুন। আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড ভাবুন। আপনার দক্ষতা ভাবুন। এর মধ্যে কোনটি কোনটিকে আরও উন্নত করা যায় তা বুঝুন। এভাবেই আরও উন্নতি হবে।

তার চেয়েও বড় কথা, নিজের সীমাবদ্ধতা বুঝুন। হয়তো ভালো লাগবে না, তারপরও নিজের গোল সেট করুন রিয়েলিস্টিকলি। “যদি লেগে যায়” মানসিকতা বা মিথ্যে আশা নিয়ে স্বল্পমেয়াদে কষ্ট করবার চেয়ে দীর্ঘমেয়াদে একটি বাস্তবসম্মত লক্ষে পৌঁছতে কাজ করা যুক্তিসঙ্গত। দীর্ঘমেয়াদে কষ্ট করতে পারার মানসিকতা যে আছে, সে স্বভাবতই উঁচু গোল সেট করতে পারে।

প্রস্তুতির চেয়ে কাজ বেশী করুন। পরামর্শ আর ম্যাটেরিয়াল সংগ্রহের চেয়ে আত্মবিশ্লেষণ বেশী করুন, প্রয়োজনে কাগজকলম নিয়ে। নিজের যে দুর্বলতাগুলো, সমস্যাগুলো রেখেঢেকে রাখেন, এড়িয়ে চলেন, পাশ কাটিয়ে যান, অথবা বহুদিন ধরেই পুষে রাখেন, সেগুলো একটু জোরেই নিজেকে বলুন। ব্যবচ্ছেদ করুন, সমাধান বার করুন। কষ্ট লাগবে, কিন্তু দেখবেন এগুতে পারছেন।

অনেকে ইন্সপিরেশন বা মোটিভেশন জাতীয় ব্যাপারগুলোর ওপর খুব নির্ভর করেন, বাজারে আজকাল এ শব্দগুলো খুব চলে! কিন্তু বাইরে থেকে আসা, কারো সাফল্য বা সংগ্রামের গল্প পড়ে আসা ইন্সপিরেশন বা মোটিভেশন অনেকটা ড্রাগের মত। এগুলোতে সাময়িক দারুণ উত্তেজনা তৈরি হয় মাত্র; হয়তো আপনার চোখে পানি এসে যায়, হয়তো খুব আবেগ অনুভব করেন, খুব প্যাশনে সে অনুযায়ী কাজ শুরু করে দেন। কিন্তু এ উত্তেজনা ক্ষণিকের, তাই কয়েকদিন বাদেই আবার নিজেকে সেই হতাশার স্কোয়ার ওয়ানে দেখতে পান। কষ্ট এবং বিরক্তি নিয়ে কাজ করার এবং রুটিনড লাইফ ধরে রাখার শক্তিটা আসে নিজের ভেতর থেকেই। হয়তো নিজের সত্যিকারের অবস্থা বিশ্লেষণ থেকে, নিজের চরম বিপদ থেকে, নিজেকে সামনে ধাক্কা দেয়ার সত্যিকারের প্রয়োজন থেকে। এবং এটিই দীর্ঘস্থায়ী এবং ফলপ্রসূ হয়। বিশ্বাস না হলে খেয়াল করে দেখুন, অন্য কারো কেইস পড়ে আপনার রি-অ্যাকশান একটা লাইক, কমেন্ট, শেয়ার বা অভিনন্দনে থেকে যায়; কিন্তু নিজের কেইসে ব্যাপারটি পরিণত হয় কাজে (অথবা সত্যিকারের হতাশা এবং কান্নাকাটিতে!)। দেখে শেখার চেয়ে ঠেকে বেশী শেখে মানুষ, এজন্যই।
যেকোনো সমস্যা, এমনকি আলসেমির সমস্যাকেও দেখতে হবে সমস্যা হিসেবে। একে বিপদ হিসেবে দেখলে কাটানো মুশকিল। আবেগের ঊর্ধ্বে যখনই উঠতে পারবেন, তখনই সমস্যার সমাধান নিয়ে আসল কাজ করতে পারবেন।

A realistic plan is always better than a fancy dream.

ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

 

– ইসহাক খান, প্রাক্তন গ্রেক ফ্যাকাল্টি


নিচের লিংক থেকে ইসহাক খানের লেখা অন্যান্য আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন-

 স্টুডেন্টদের সাধারণ দুর্বলতা – পার্ট ১ – Vocabulary
 স্টুডেন্টদের সাধারণ দুর্বলতা – পার্ট ২ – Analytical Writing
 স্টুডেন্টদের সাধারণ দুর্বলতা – পার্ট ৩ – Reading Comprehension
 স্টুডেন্টদের সাধারণ দুর্বলতা – পার্ট ৪ – Speaking (TOEFL)
 Originality of writing: এসওপি, এলওআর, ইমেইলিং প্রফেসরস, সিভি ও রেজুমে (১ম খণ্ড)
 Originality of writing: এসওপি, এলওআর, ইমেইলিং প্রফেসরস, সিভি ও রেজুমে (২য় খণ্ড)
 Customized Routine: নিয়মিত ফলো করা (১ম খণ্ড)
 Customized Routine: নিয়মিত ফলো করা (২য় খণ্ড)
 আমার জন্য সঠিক রাস্তা কোনটা: বিদেশ, জিআরই, স্বদেশ, বিসিএস, চাকরি?
 রেকমেন্ডেশন বিড়ম্বনা!
 Research: রিসার্চ বা গবেষণা
 ইউএস অ্যাম্বেসির ভেতরের পরিবেশ এবং স্টেপগুলো
 ইংরেজিতে দক্ষতা এবং কিছু স্ট্র্যাটিজি
 Teaching: শেখা ও শেখানো, দেয়া ও নেয়া
 ইউএস ভিসা পাওয়া না পাওয়া এবং হায়ার স্টাডির কিছু পয়েন্ট
 জিআরই এবং টোফেল: হায়ারস্টাডির প্রস্তুতি হোক স্ট্র্যাটিজিক্যালি (পার্ট- ১)
 জিআরই এবং টোফেল: হায়ারস্টাডির প্রস্তুতি হোক স্ট্র্যাটিজিক্যালি (পার্ট- ২)
 জিআরই এবং টোফেল: হায়ারস্টাডির প্রস্তুতি হোক স্ট্র্যাটিজিক্যালি (পার্ট- ৩)
 জিআরই এবং টোফেল: হায়ারস্টাডির প্রস্তুতি হোক স্ট্র্যাটিজিক্যালি (পার্ট- ৪)
 আমার অভিজ্ঞতা: জিআরই প্রস্তুতি এবং পরীক্ষা
 আমার অভিজ্ঞতা: টোফেল প্রস্তুতি এবং পরীক্ষা
 আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা এবং দরকারি কৌশল