স্পিকিং টেস্ট দেয়ার দিন অর্থাৎ আয়েল্টস ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার সময় অবশ্যই আপনাকে সাথে পাসপোর্ট নিয়ে যেতে হবে। কারন পাসপোর্ট দেখে পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন কনফার্ম করা হয়। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রথমেই আপনাকে আপনার পাসপোর্ট জমা দিতে হবে। পাসপোর্ট জমা দেয়ার পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই আপনাকে ইন্টারভিউয়ের জন্য একটি রুমে ডেকে নিয়ে যাওয়া হবে।

ইন্টারভিউ রুমে একজন নেটিভ ইংলিশ স্পিকার আপনার ইন্টারভিউটি নিবেন। তার সাথে আপনার সাক্ষাৎকারটি সম্পূর্ণ রেকর্ড করা হবে। রেকর্ডিং শেষে আপনার সাথে তার কথোপকথনটি দুইজন অভিজ্ঞ ইংলিশ ট্রেইনার দিয়ে যাচাই করা হবে। এই সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতেই আপনাকে স্পিকিং সেকশনের ফাইনাল স্কোর দেয়া হবে।

তবে এই ইন্টারভিউ রুমে কি করবেন আর কি করবেন না তা জানার পূর্বে আয়েল্টস টেস্টের স্পিকিং সেকশনের প্রশ্ন কাঠামো সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন ‘আয়েল্টস: স্পিকিং সেকশনের ব্যবচ্ছেদ’ আর্টিকেল থেকে। এছাড়াও স্পিকিং সেকশনে কি কি বিষয়ের উপর স্কোরিং হয় তা জানতে ক্লিক করুন এখানে

আয়েল্টস স্পিকিং ইন্টারভিউ রুমে যা করণীয় এবং বর্জনীয়:
  • অনেক শিক্ষার্থী রয়েছেন যারা ইংলিশ স্পিকিং বেশ কনফিডেন্ট। তবে ইন্টারভিউ রুমের পরিবেশ সম্পর্কে পূর্ব ধারনা না থাকায় অনেকেই সহজ জিনিসে ভুল করে ফেলেন।

যেমন: ইন্টারভিউয়ার নাম- পরিচয় জিজ্ঞেস করলে নিজের নাম এবং পরিচয় দিতেই অনেক সময় ভুল হয়ে যায়। ধরা যাক, একজন পরীক্ষার্থীর পাসপোর্ট এবং টেস্ট রেজিস্ট্রেশনে দেয়া নাম এএম রহমান (A.M. Rahman)। তিনি নিজের নাম বলে ফেলেন Abdul Mujibur Rahman। যদিও বলা উচিত পাসপোর্টে নামটি।

পরীক্ষা কেন্দ্রের অনিয়ন্ত্রিত মানসিক চাপে এমনটা হয়ে থাকে। এতে করে আপনি যে কনফিডেন্ট না তা ইন্টারভিউয়ার ধারনা করে নেবেন। এমন ছোটখাট ভুল না করার জন্য প্রথমে গিয়েই ইন্টারভিয়ারকে সম্বোধন জানাতে হবে।

  • যতোটা পারা যায় মন খুলে কথা বলার চেষ্টা করতে হবে। কোন প্রশ্নে বর্ণনা করার সুযোগ থাকলে তা অবশ্যই কাজে লাগানো উচিত।

যাতে ইন্টারভিউয়ার বুঝতে পারে যে আপনি এই বিষয়ে ভাল জ্ঞান রাখেন এবং কথাও বেশ স্বচ্ছন্দ্যের সাথে বলতে পারেন।

  • কথা বলার সময় কোন ধরনের সংকোচ বা ভয় পাচ্ছেন এমনটা প্রদর্শন না করার চেষ্টা করুন। ইংরেজিতে কথা বলুন আত্মবিশ্বাস এবং শক্ত কণ্ঠে।

এছাড়াও কথার মাঝে যাতে কোন জড়তা কাজ না করে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখুন। ইন্টারভিউয়ের সময় স্বত:স্ফূর্তভাবে কথা বলতে থাকুন যতক্ষণ পর্যন্ত না ইন্টারভিউয়ার থামিয়ে দেয়।

  • ইন্টারভিউয়ার যখন আপনাকে নিজের উত্তর প্রস্তুত করার জন্য ১ মিনিট সময় দিবেন তখন সে সময়টাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে।

যে টপিক দেয়া হয়েছে সেসম্পর্কে কিছু পয়েন্ট নোট করে ফেলতে হবে। এবং কথা বলার সময় সে পয়েন্ট ধরে ধরে এবং গুছিয়ে কথা বলতে পারাটা প্লাস পয়েন্ট।

  • কথা কখনোই খুবই আস্তে অর্থাৎ নিচু আওয়াজে কথাটা ঠিক না। বরং স্পষ্ট এবং যাতে ইন্টারভিউয়ার পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারেন এমনভাবেই বলা উচিত।

লক্ষ্যনীয় হলো, ইন্টারভিউয়ার যাতে বেশি কথা বলার সুযোগ না পায়। বরং যেই ১১-১৪ মিনিট আপনি তার সাথে আছেন তাকে শুধু প্রশ্ন করার সুযোগটুকুই দিন আর বাকি সময়টা ক্ষমতা নিজের কাছেই রাখার চেষ্টা করুন।

  • ইন্টারভিউয়ার কোন টপিকের উপর কথা বলতে বললে তা মুখস্ত পড়ার মতো বলা উচিত নয়।

বরং নিজের বাস্তব জ্ঞানের প্রয়োগে তাকে বিভিন্ন উদাহরন এবং ভিন্ন রকমের কিছু বলতে পারেন। যাতে করে সে বুঝতে পারে যে, আপনি এই বিষয়ে জানেন এবং কথা বলতে পছন্দ করেন।

  • যদি এমন কোন টপিক হয় যেখানে আপনাকে হয়তো ইন্টারভিউয়ারের সাথে দ্বিমত পোষন করতে হচ্ছে, করুন। তবে যুক্তি দিয়ে তার সামনে নিজের মতামত প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করুন।

এমন সময় ভয় পাবার কিছু নেই। আর অবশ্যই পজিটিভ জিনিসের পক্ষেই থাকুন। নিজের মতামতকে পজিটিভ ভাবেই তুলে ধরার চেষ্টা করুন।

  • কথা বলার সময় ইন্টারভিউয়ারের প্রশ্ন মনযোগ দিয়ে শুনতে হবে। যদি স্পষ্টভাবে বোঝা না যায়, সেক্ষেত্রে তাকে অনুরোধ করা যেতে পারে আরেকটু পরিষ্কার ভাবে বলার জন্য।

তবে সব প্রশ্নেই এমনটা যাতে না হয়। সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। এবং ইন্টারভিউয়ারেরও যাতে আপনাকে এমনটা বলতে না হয়।

  • ইন্টারভিউয়ারের কথা এবং নির্দেশনা ভাল মতো লক্ষ্য করতে হবে। তিনি কোন ধরনের উত্তর আসা করছেন তা আঁচ করার চেষ্টা করুন এবং পরের প্রশ্নটি কি হতে যাচ্ছে সে বিষয়ে আগে থেকেই ধারনা করুন।

নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর কথা বলার সময় এমনটা যাতে না হয় যে, পরের প্রশ্নের উত্তর আপনি প্রথমবারেই দিয়ে দিয়েছেন। বরং উপস্থিত বুদ্ধির প্রয়োগ ঘটাতে হবে। এছাড়াও ইন্টারভিউয়ার যদি কোথাও থামিয়ে দেয় তবে সেখানেই থেমে যাওয়া উচিত। অর্থাৎ তার নির্দেশনা মেনে চলা।

  • ইন্টারভিউয়ারের কোন প্রশ্নেই ‘হ্যা/না’ দিয়েই উত্তর করে দেয়া যাবে না। অর্থাৎ ১ শব্দে যাতে উত্তর শেষ না হয়ে যায়। বরং উত্তরটি পূর্ণ বাক্যে দিতে হবে।

উদাহরণস্বরূপ, যদি ইন্টারভিয়ার প্রশ্ন করে- What is your name? উত্তরে- A.M. Rahman না বলে, বরং My name is A.M. Rahman বলতে হবে।

উল্লেখ্য, আয়েল্টস পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট তারিখে রেজিস্ট্রেশনের পর স্পিকিং পরীক্ষার তারিখ জানিয়ে দেয়া হয়। অর্থাৎ স্পিকিং টেস্ট হয়তো আয়েল্টস পরীক্ষার দিনের ১ সপ্তাহ আগে কিংবা পরে অনুষ্ঠিত হতে পারে। স্পিকিং টেস্ট কবে অনুষ্ঠিত হবে তা মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ করে কিংবা ইমেইল এর মাধ্যমে পরীক্ষার ২-৩ দিন আগেই জানিয়ে দেয়া হয়।

আয়েল্টস ইন্টারভিউয়ে (স্পিকিং সেকশন) ভাল স্কোর তোলার টিপস জেনে নিন এখানে