রিসার্চ অ্যাসিসটেণ্টসিপ (RA) পাওয়া অনেকটাই (বা পুরোটাই) নির্ভর করে প্রফেসরের ইচ্ছা আর সামর্থ্যের উপর। আর ঠিক সেই কারণেই প্রফেসরের সাথে আগে থেকেই যোগাযোগ (ইমেইলে) করাটা ভাল। কিন্তু, প্রফেসর তো আপনাকে চেনেন না, আপনার সম্পর্কে তার কোন ধারনাও নেই। কেবল একটি ইমেল দেখেই কেন উনি আপনাকে নিতে আগ্রহী হবেন?

বিষয়টা একটু নিজের দিক থেকে চিন্তা করুন। আপনি একটি কোম্পানির মালিক, কাজের জন্য একজনকে হায়ার করবেন। আপনি কি রেনডোমলি যাকে পাবেন তাকেই অ্যাপয়েন্ট করবেন? উত্তরটা ‘না’ হওয়াই স্বাভাবিক। প্রার্থীর ভেতর এমন কোন একটা সম্ভাবনা আপনাকে দেখতে হবে (বা বের করতে হবে), যা দেখেই আপনি তাকে নিজের কাজে নেবার কথা চিন্তা করতে পারবেন। ঠিক এই চিন্তাটা একজন প্রফেসরের মাথাতেও থাকে। এখন কথা হচ্ছে, একটি ইমেল লিখে আপনি কিভাবে আপনার পটেনসিয়ালিটি তুলে ধরতে পারবেন? কাজটি একটু চ্যালেঞ্জিং আর সময়সাপেক্ষও বটে, তবে চেষ্টা তো করাই যায়। আপনার সামগ্রিক প্রোফাইল (যেমন- একাডেমিক, টেস্ট স্কোর, কাজের অভিজ্ঞতা ইত্যাদি) ভাল হলে প্রথমেই সেটা একজন প্রফেসরকে আকর্ষিত করবে (ন্যাচারাল হিউম্যান সাইকোলজি)। কিন্তু আপনার একটু ‘কৌশলে এবং গুছিয়ে’ করা ইমেইল প্রোফাইলের দুই-একটা দুর্বল দিককে আড়াল করে আপনাকেও কাছাকাছি লেভেলের আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে।

কিভাবে?… দেখুন:

যাকে ইমেইল করবেন বলে মনস্থির করেছেন, তার সম্পর্কে একটু পড়াশোনা করুন। তার পেপারগুলো পড়ুন। পারলে একদম সাম্প্রতিক কালের পেপারগুলো বেশি করে পড়ুন। অনেকসময়ই দেখা যায়, প্রফেসরদের কাজের প্যাটার্ন সময়ের সাথে পাল্টায়। ৩ বছর আগে উনি যেই বিষয়ে কাজ করতেন, এখন হয়ত সেটা নিয়ে আর কাজ করছেন না। তার বর্তমান কাজ, রিসেন্ট পাওয়া ফান্ড ডিটেইলস ঘাঁটাঘাঁটি করতে করতেই বিষয়গুলো আরও ক্লিয়ার বুঝতে পারবেন। কোনভাবে যদি প্রফেসরের সবচেয়ে আগ্রহের কাজটা বের করতে পারেন (যেটা অনেকটাই আপনার আগ্রহ আর কাজের সাথে মিলে যায়), আর ইমেইলে সেটা ছোট করে হলেও তুলে ধরতে পারেন, তাহলে প্রফেসর কিছুটা হলেও বেশি আগ্রহ দেখাবেন।

‘রিসার্চ পেপার’ থাকাটা কাজের একটা অথেনটিক স্বীকৃতি। এতে বোঝা যায় যে, আপনি হাতে কলমেই কাজটার প্রতি আগ্রহী। কিন্তু আন্ডারগ্রেড লেভেলে অনেকরই পেপার থাকেনা, আর এটাই স্বাভাবিক (প্রফেসর এটা বোঝেন)। কাজেই পেপার না থাকলে হতাশ হবার কোন কারণই নেই। বরং রিসার্চ রিলেটেড টুকটাক যে কাজই করেছেন, সেগুলোই সায়েন্টিফিকভাবে তুলে ধরুন। এতেও প্রফেসরের ভেতর একধরনের বিশ্বাস তৈরি হবে।

প্রফেসর নিজেও প্রফেশনাল, আর উনি আপনার থেকে প্রফেশনালিজমই আশা করেন। কাজেই অহেতুক তাকে তেল দিবেন না (যেমন- আপনার মতো কাজ আমি আর কোথাও দেখি নাই… ইত্যাদি)। আপনি তার সাথে কাজ করার জন্য মরিয়া হয়ে আছেন, এমনটাও বোঝানোর কোন দরকার নেই। আপনি তার সাথে কাজ করতে আগ্রহী, উনি সুযোগ দিলে কাজ করতে চান- এতোটুক পরিষ্কারভাবে বোঝাতে পারলেই যথেষ্ট। এরকম ছোটোখাটো বিষয়গুলো মাথায় রেখে ইমেইল করতে পারলেই দেখবেন, প্রফেসর ভালই রিপ্লাই দিচ্ছেন। দশজনকে নক করলে অন্তত একজনও যদি আপনার প্রতি আগ্রহ দেখায়, তাতেই আপনার লাভ… অন্তত কোন ক্ষতি তো নেই!