”প্রবাসে” পর্ব ১৯ঃ ফেলে এলাম প্রেইরিল্যান্ড

আমি গাড়ি চালাচ্ছি। ভালই চালাচ্ছি। তবে কার্বের সাথে একদিন ধাক্কা খেয়ে গাড়ির টেইল লাইট ভেঙে ফেলেছি। আশিক তার বাড়িতে রাতে আমাদেরকে দাওয়াত দিয়েছে। আশিককে আগে আড়ালে কিপটা আশিক ডাকা হতো। কিন্তু এখন আর ডাকা যাচ্ছে না। কারণ বউ আসার পর থেকে আশিক রোজই দাওয়াত দিচ্ছে। দাওয়াত খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি। আজকেও আশিক দাওয়াত দিয়েছে। […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ১৮ঃ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া, রুমা আপুর আগমন

আমাদের গাড়ি চালানোর বেশ অগ্রগতি হচ্ছে। নাসরিন পার্কিং লট থেকে এখন রাস্তায় চালায়। আমি বললাম আমিও চালাবো। নাসরিন বললো, না তুই তো নিজের লেনেই থাকতে পারিস না। তোর দেরি আছে। আমার মনে হল, নাসরিন সবসময় বেশি বেশি বলে, অকারণেই আমাকে বকাবকি করে। আমি বললাম, আমি চালাতে চাই। হোসেন বললো, আচ্ছা চালাক না। ভিতরের রাস্তায় তো। […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ১৭ঃ অরিগন ভ্রমণ-ফেরা, নাসরিনের দেশ থেকে ফেরা, লার্নার্স পারমিট, ডান চোখ নষ্ট হওয়া, গাড়ি কেনা ও ড্রাইভিং শেখা

সকালে উঠে দেখি রিমি আপু অফিস চলে গেছেন। রাশেদ ভাই অফিস থেকে ছুটি নিয়েছেন। রাশেদ ভাই আমাদের নাস্তাটাস্তা গুছিয়ে দিলেন। আমরা একে একে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সারলাম। ফ্রেশ হতে একটু দেরি হল। একটি মাত্র বাথরুম, মানুষ অনেক। আমেরিকানদের বাসায় বাথরুম সচারচর একটি থাকে। কদাচিৎ দুটি দেখা যায়। আমার ধারণা আমেরিকানরা বাথরুমের কাজ বাইরেই সারে। এখানকার […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ১৬ঃ অরিগনের গল্প, ক্যানন বিচ, লাল টমেটো

বমি করার কারণে আমাকে বাথরুম  খুঁজতে হল। মেয়েরা সবাই বাথরুম খুঁজছে। বাথরুম খোঁজার গৌণ কারণ বাথরুম করা আর মুখ্য কারণ সাজগোজ ঠিক আছে কিনা দেখা। বাথরুমে যেয়ে অবশ্য কারো আর সাজগোজের প্রবৃত্তি রইল না। আমেরিকার ঝা চকচকে বাথরুম নয়। বেশ খারাপ, গন্ধয়ালা বাথরুম। তার আবার সিটকিনি নেই। বাইরে থেকে একজন ধরে রেখেছে। ইমরান ভাইয়ের বউ […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ১৫ঃ অরিগন ভ্রমন, শুরুর গল্প।

আমি এয়ারপোর্টে বসে আছি। বোর্ডিং শুরু হলে প্লেনে ঊঠবো। আমার সাথে দুটি বাচ্চা যাচ্ছে। তাদের বয়স ১০-১২। তারা খুব ছোটাছুটি করছে। আর মাঝে মাঝেই হি হি করে হাসছে। আমাকে নিয়ে হাসছে কিনা কে জানে। আমিও একটি হাসি দিলাম। সাথে সাথে তাদের হাসি হাসি মুখ গম্ভীর হয়ে গেল। বোর্ডিং শুরু হলে এয়ারপোর্টের এক মহিলা এসে বাচ্চাদুটোকে […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ১৪ঃ মসজিদ, ঈদ, ইয়ামিনী আসা, নতুন বাসা, আমেরিকান বিয়ে ও অরিগন যাবার গল্প

দুটি আমেরিকান ছেলে আমাদের ফায়ার এলার্ম খুলতে সাহায্য করল। আগুন নিভলে ওরা চলে গেল। আমি তখন কাঁদছি। কিছুটা ভয়ে বাকিটা লজ্জায়। নিজের দায়িত্ব জ্ঞানহীনতায়। সুরিয়া খুব ভাল মেয়ে ছিল। তার বাসায় এরকম একটি কাণ্ড ঘটিয়েছি। তবু সে কিছুই বললো না। তবে আগুন নিভলে পাতিল সরিয়ে দেখি কার্পেট পুড়েছে। টাইলসও পুড়েছে। এই পোড়াপুড়ির কারণে পরে আমাকে […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ১৩ঃ মুহিত ভাইয়ের গল্প, আমার আগুন ধরিয়ে ফেলা

খাটটি পেয়ে আমার সারাদিন শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। আগের বাসায় ম্যাট্রেস ছিল। বাসা ছাড়ার সময় বাড়ীয়ালাকে ফেরত দিতে হয়েছে। ম্যাট্রেসগুলোয় উনি ফ্রি থাকতে দিয়েছিলেন। ওটি তার সামার ক্যাম্পিং এ লাগে। আমেরিকায় ক্যাম্পিং খুব জনপ্রিয়। সামার আসলেই ঘরবাড়ি ফেলে এরা বনে বাদাড়ে চলে যায়। সেখানে কিছুদিন তাঁবু খাটিয়ে থাকে। বন জঙ্গল অসহ্য মনে হলে আবার লোকালয়ে […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ১২ঃ সাজ্জাদের চলে যাওয়া, লিবিয়ান পরিবারের গল্প

মেক্সিকান সুমো কুস্তিগিরটাকে পুলিশ কেন ধরেছিল আমার ঠিক জানা নেই। তবে শুনেছি আমেরিকার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে মেক্সিকানদের অবদান অপরিসীম। ড্রাগ ট্রাফিকিং, অস্ত্র ব্যবসা, পতিতাবৃত্তি কোনটিতেই তারা পিছিয়ে নেই। মেক্সিকান মেয়েরা দেখতে ভাল। উজ্জ্বল ত্বক, গায়ের রঙ অনেকটা এশিয়ান ফর্সা মেয়েদের মত। চোখ–নাক একটু বোঁচা বোঁচা হলেও বেশ আবেদন আছে। আমি ধরে নিলাম সুমো কুস্তিগিরটা নিশ্চয়ই এরকম […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ১১ঃ আমার বাইবেল শেখা।

সামার থেকে আমার ফুল ফান্ডিং হয়েছে। আগের থেকে আমি দ্বিগুন বেতন পেতাম। বাসা ভাড়া খেয়ে দেয়ে আমার বেশ টাকা বেঁচে যেত। সেটা দিয়ে শপিং করতাম। বাইরে খেতে যেতাম। আর বাকিটা জমিয়ে রাখতাম টিউসন ফি দেবার জন্য। গত দু’সেমিস্টারের জন্য বাসা থেকে পাঁচ হাজার ডলার এনেছিলাম, টিউসন ফির অনেকটা সেখান থেকেই দিয়েছি। সামনের সেমিস্টার গুলোতে টিউসন […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ১০ঃ বিদেশী ভাষা শেখা ও আমেরিকান চাষাবাদের গল্প

এলোমেলো ভাবনা সরাতে আমি নামাজ পড়তাম। মাঝে মাঝে লেখালেখি করতাম। আমি লিখে লিখে ফেসবুকে পোস্ট দিতাম। সুরিয়া খুব রেগে যেত। ও বলত ইংরেজিতে কেন লেখ না। ওকে বলতাম ইংরেজিতে আমার এত দখল নেই। আর মাইকেল মধুসূদন হবার ইচ্ছেও নেই। সুরিয়া মাইকেলের নাম জানত। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার সে হুমায়ূন আহমেদের নাম জানত। শরৎচন্দ্রের নাম জানত। […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ৯ঃ সঙ্গীহীন জীবন, সুরিয়া মথুর গল্প, সামারের দিনলিপি, একা পথ চলা

সুরিয়ার বাসায় আমি একা উঠছি। কিন্তু আমার সাথে দুজনের জিনিস। আমার আর নাসরিনের। তাই ওঠার আগের দিন, নাসরিনের কিছু জিনিস আমি কাউসার ভাইয়ের বাসায় রাখি। শরিফ ভাই আর কাউসার ভাই ওনারা দুজন একসাথে থাকেন। যদিও বাসাটা একজনের নামে নেওয়া। বাড়ির ম্যানেজার জানেন কাউসার ভাই একা থাকেন। প্রতি মাসে ম্যানেজার একবার ইন্সপেকশনে আসেন। তবে আসার আগে […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ৮ঃ সামার এসেছে, বেতন পাইনি, প্রথম বাসা ছেড়ে দিলাম

ঐদিন নর্থ ডাকোটা সাউথ ডাকোটা রিসার্চ সামিটে আমার একটা পোস্টার প্রেজেন্টেশন থাকে। ওখানে বাংলাদেশি একজনের সাথে পরিচয় হয়। দেখতে এশিয়ানরা অনেকটা এক রকম হলেও আমি এখন বাঙালি, পাকিস্তানি, ভারতীয় মোটামুটি আলাদা করতে পারি। চীনা, জাপানি, কোরিয়ান এদের সবারই নাক বোঁচা, কুতকুতে চোখ, তবু কোথায় জানি পার্থক্যটা বোঝা যায়। আমি নিজে থেকে যেয়ে ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করি […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ৭ঃ ল্যাব ও ফরাসী যুবকের হৃদয় ভাঙার গল্প।

প্রতি বৃহস্পতিবার ল্যাব মিটিং থাকে আমাদের। প্রথম মিটিং এ নিজের সম্পর্কে প্রেজেন্টেশন দিতে হবে। নিজের পরিচয় শেষে, প্রেজেন্টেশনে আমি দেশের পরিচয় দেই। ইতিহাস দিয়ে শুরু করি। ব্রিটিশ শাসনের কথা বলি। এসময় ফ্রাঙ্ক চেঁচিয়ে ওঠে, দে রুল্ড আস, দে রুল্ড ইউ, দে রুল্ড এভেরিবডি। ফ্রাঙ্কের চেঁচানি থামলে আমি ওদের সুন্দরবন দেখাই, কক্সবাজার সি বীচ দেখাই। এটা […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ৬ঃ কামরানকে হাসপাতালে নেওয়া, টেকো সুদীপ আর ব্রিটিশ প্রফেসরের গল্প

নতুন সেমিস্টার শুরু হতে বেশ বাকী। সবাই বেশ ফ্রি, প্রায়ই কোন না কোন ভাবীর বাসায় দাওয়াত থাকে। আমি আর নাসরিন খুব সাজগোজ করি। তারপর সাজ্জাদের গাড়িতে চড়ে দাওয়াত খেতে যাই। আশিক আর কামরান ও থাকে। আমাদের সবার খুব ভাল বন্ধুত্ব হয়। আশিককে আর এত খারাপ লাগে না এখন। ওর কথা গুলো আমি এখন মজা হিসেবে […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ৫ঃ ইন্টারন্যাশনাল নাইট, বাসা নিয়ে ঝামেলা, শায়লা আপুর চলে যাওয়া

ঠাণ্ডা থেকে বাঁচতে খুব সকালে ডিপার্টমেন্টে চলে যাই আমরা। ডিপার্টমেন্টের তাপমাত্রা সবসময় পঁচাত্তর ডিগ্রি ফারেনহাইট থাকে। আমেরিকানদের দেখি পাতলা কিছু পরে ঘোরে। তবে আমার ডিপার্টমেন্টের ভিতরেও সোয়েটার লাগে। একটা কুইজ ছিল, দিলাম। এসাইনমেন্ট ছিল, জমা দিয়ে বিকেলে বাসায় ফিরেছি। বাড়িয়ালা হিটার ঠিক করে দিয়েছে। আমি বাথরুমে এক ঘণ্টা গা ডুবিয়ে বসে থাকি। রাতের পার্টির জন্য […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ৪ঃ ডরমেটরির গল্প, প্রথম তুষারপাত

গ্রাড কো–অর্নিডেটর আমাকে ডাকলেন। সেমিনার কোর্স ইন্সট্রাকটর ডক্টর ডেনিশ হেলডার এর কাছে নিয়ে গেলেন। তিনি ছিলেন, আমার দেখা অসম্ভব ভাল মানুষদের একজন। আমাকে ওয়েলকাম করলেন উনি। আমি তখন ভয়ে কাঁপছি। তিনি এমন ভাব করলেন, যেন কিছুই হয়নি। আমাকে ঘুরে ঘুরে তার ইমেজ প্রসেসিং ল্যাব দেখালেন। সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। তারপর বললেন, তুমি এক মাস […]

Read More

”প্রবাসে” পর্ব ৩ঃ পুলিশ আসা, রেজিস্ট্রেশন বিড়ম্বনা

“ প্রবাসে” পর্ব ৩ঃ পুলিশ আসা, রেজিস্ট্রেশন বিড়ম্বনা   ছেলেটি আমার দিকেই এগিয়ে আসছে। বুঝতে পারছিনা, কি করব। আমাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে সে একটানে আমার কাবার্ড খুলল। কাপড় চোপড় তছনছ করছে। মনে হল কি যেন খুঁজছে। সাজ্জাদ আমাকে একবার বলেছিল, আমেরিকানরা ড্রাঙ্ক হলে, অনেক সময় ভুলে অন্যের বাসায় ঢুকে পড়ে। ততক্ষণে আপু জেগে গেছে। কি হচ্ছে […]

Read More

“ প্রবাসে” পর্ব ২ঃ নতুন বাসা, ওরিয়েন্টেশন, রাস্তা হারানো

“ প্রবাসে” পর্ব ২ঃ নতুন বাসা, ওরিয়েন্টেশন, রাস্তা হারানো লাগেজ পেয়েছি। একটা ছোট মাইক্রোবাসে আমরা। আমি, একজন চাইনিজ, একজন আফ্রিকান আর এক মিডল ইস্টের পরিবার। তবে দেশের নামটা ঠিক মনে নেই। আমরা অনেক অনেক মাঠ পেরুচ্ছি। ব্রুকিংস পৌঁছে গেলাম। আমাকে সাজ্জাদের বাসার সামনে নামিয়ে দেওয়া হল। সাজ্জাদের সাথে এর আগে কখনও কথা হয়নি। হাল্কা পাতলা […]

Read More

“ প্রবাসে” পর্ব ১ঃ যাত্রা পথের গল্প

 প্রবাসে পর্ব ১ঃ যাত্রা পথের গল্প ইমিগ্রেশন পার হলাম, আর কাউকে দেখা গেল না। আমার কাছে একটা ব্যাকপ্যাক। সেটা নিয়ে ওয়েটিং লাউঞ্জে বসে আছি। আশেপাশে অনেক ফরেনার ঘোরাঘুরি করছে। এত ফরেনার একসঙ্গে এর আগে দেখিনি। বুঝলাম একদল শ্রমিকও যাচ্ছে আমাদের সাথে। পুলিশ টাইপের কয়েকজন লোক আমাকে জেরা করল। তাদের সন্দেহের তালিকায় ছিলাম কিনা জানি না তবু […]

Read More