প্রফেসর নাকি গ্রাজুয়েট অ্যাডমিশন কমিটি-ফান্ডের জন্য কার কাছে ধরণা দিবো। এই প্রশ্নের উত্তর আপনাদের জানাবো একটি সুন্দর গল্পের মধ্যে দিয়ে। তার আগে আসুন জেনে নেই প্রফেসর এবং গ্রাজুয়েট অ্যাডমিশন কমিটির কি কাজ করে সে সম্পর্কে।

বাংলাদেশের বিশ্বদ্যিালয়গুলোর মতো আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিন্ন ভিন্ন কাজ পরিচালনা করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন কমিটি রয়েছে। ভর্তি কার্যক্রম সঠিকভাবে পালনের জন্য প্রতি বছর প্রত্যেক স্কুল (আমেরিকান ভাষায় বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টকে স্কুল নামে ডাকা হয়) থেকে প্রফেসরদের একত্র করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। যা মূলত গ্রাজুয়েট অ্যাডমিশন কমিটি নামে পরিচিত। সেই কমিটির প্রতিজনকে আলাদা করে কোন একটি স্কুলের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্ব প্রাপ্ত এসব প্রফেসর আবার গ্রাজুয়েট কো-অর্ডিনেট হিসেবে পরিচিত। এরপর ভর্তি অফার ঘোষণা করা হয়। সারা বিশ্ব থেকেই আবেদন পত্র এসে জমা হতে শুরু করে। সেই আবেদন গুলো নিয়ে সেই কমিটি বিভিন্ন মিটিং করে। আলোচনা করে। আবেদনকারীর সিজিপিত্র, জিআরই স্কোর, টোফেল/আইয়েল্টস স্কোর, এসওপি, এলওআর ইত্যাদি যাচাই বাছাই করে তারপর প্রথমিক তালিকা প্রস্তুত করে। এরপর সেই গ্রাজুয়েট অ্যাডমিশন কমিটির আরেকটি মিটিং এ বছরের ফান্ড বরাদ্দ নিয়ে আলাপ আলোচনা হয়। আবেদনকারীদের মধ্য থেকে তালিকার প্রথম দিকে থাকা আনুমানিক ৬ থেকে ১০ জনের মাঝে সেই ফান্ড বা স্কলাশিপ বিতরণ করে দেয়। সবশেষে চূডান্ত তালিকা প্রস্তুত করার আগে প্রাথমিক তালিকায় থাকা সব স্টুডেন্টকে ইন্টারভিউ নিয়ে থাকে এবং ভর্তি কার্যক্রম শেষ করে।

এবার মূল গল্পে আসা যাক, রহিম মিয়া নামের কোন শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগে ভর্তির জন্য আবেদন করলো। রহিম মিয়া চার বছর পড়াশুনার শেষ বর্ষে এসে প্রকল্প হিসেবে রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিয়ে কাজ করেছে। সিজিপিত্র ও খুব একটা ভালো না। কি করবে আর কি করা অনুচিত সেই বিষয় নিয়ে না ভেবে গুগলে সার্চ  করা শুরু করলো রহিম মিয়া। গুগলে সার্চ  করে রহিম মিয়া সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের খোঁজ পেল। এবং জানতে পারলো  প্রাণীবিদ্যা বিভাগের একজন প্রফেসর একই ধরণের প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করতে আগ্রহী। রহিম মিয়া ডিপার্টমেন্টর যোগাযোগ বিভাগ থেকে প্রফেসরের ই-মেইল আইডি যোগাড় করে তার সাথে ই-মেইলে কথা বলতে শুরু করলো। তার আগ্রহের কথা জানালো। রহিম মিয়ার আগ্রহ দেখে খুশি হয়ে গেলো প্রফেসর। তাকে আবেদন করার পরামর্শ দিলো। আবেদনের বাছাই প্রক্রিয়ার মাপকাঠিতে দেখা গেলো রহিম মিয়া শেষের দিকে। কিন্তু প্রফেসর তাকে আগে থেকে চিনতে পারায়, তার আগ্রহ জানা থাকায় রহিম মিয়াকে ফান্ড দিতে সুপারিশ করে গ্রাজুয়েট অ্যাডমিশন কমিটির কাছে। ফলে স্কোর তেমন ভালো না থাকা সত্ত্বেও বাঘা বাঘা সব স্টুডেন্টকে টপকে ফান্ড পেয়ে আমেরিকায় পড়াশুনার সুযোগ পায় রহিম মিয়া।

আরো ভালোভাবে ব্যাপারটি বুঝানোর জন্য নিচে একটি তুলনা দেওয়া হলো। আশা করি বুদ্ধিমানদের জন্য এই সামান্য ইশারই যথেষ্ট হবে।

Screenshot_1