অ্যাডমিশন এবং ফান্ডিং জোগাড় করার অপরিহার্য অংশ হলো উপযুক্ত প্রফেসর জোগাড় করা। যদিও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রফেসরের সাথে আগাম যোগাযোগ ছাড়াই ‘unassigned’ হিসাবে আপনি অ্যাডমিশন পেতে পারেন, তার পরেও উপযুক্ত প্রফেসর জোগাড় করতে পারলে ফান্ডিং অনেকাংশে সহজ হয়ে যায়।
কিন্তু সেই উপযুক্ত প্রফেসর খুঁজে বের করার উপায় কি? কিভাবে বুঝবেন একজন প্রফেসর কোন ফিল্ডে কাজ করছেন, কিভাবে পাবলিশ করছেন এবং সায়েন্টিফিক সোসাইটিতে তার অবস্থান কেমন? এই আর্টিকেলে গুগল স্কলারের সাহায্যে কীভাবে এটা করা যায় সে বিষয়ে বলবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সাইট
বিশ্ববিদ্যালয়ের আপনার কাংখ্যিত ডিপার্টমেন্টে গিয়ে Graduate Programs অংশে যাবেন, এবং সেখান থেকে Faculties বা Faculty and Staff এ ধরণের কোন লিংকে গিয়ে ফ্যাকাল্টিদের সবার নাম একসাথে দেখতে পাবেন। একেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তালিকা এক এক ভাবে থাকতে পারে। যেভাবেই থাকুক, সেখানে তাদের প্রাথমিক বায়োডাটা ও কাজের ধরণের সংক্ষিপ্ত বিবরণ থাকবে আশা করা যায়।
গুগল স্কলার সাইট
scholar.google.com -এটা হলো গুগল স্কলার ওয়েবসাইটের ঠিকানা, যেখানে আপনি কোন নির্দিষ্ট ফ্যাকাল্টির প্রকাশিত আর্টিকেল ও সাইটেশন ইত্যাদির তথ্য পেতে পারেন।
উদাহরণ হিসাবে আমরা ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট অস্টিন (ইউটি-অস্টিন) স্কুল অব এন্জিনিয়ারিং এ গিয়ে র্যান্ডম ভাবে একজন প্রফেসর খুজে বের করলাম, যার নাম Jon Olson. আমরা আরো দেখতে পেলাম যে তিনি সম্প্রতি Petroleum & Geosystem বিভাগের চেয়ার পদে আসীন হয়েছেন লিংক এখানে ।
এবার আমরা গুগল স্কলারে গিয়ে তার নাম দিয়ে সার্চ করে এরকম একটা পেইজ দেখতে পেলাম:
লক্ষ্য করুন, তার সাইটেশনের সংখ্যা আড়াই হাজারের উপরে, যেখান থেকে বোঝা যাচ্ছে তিনি বেশ ভালো রিসার্চ করেন। সেই সাথে মনে রাখবেন, কেউ যদি ৪০-৫০টা ভালো পেপার করে রিসার্চ বন্ধ করে দেয় তাহলে সময়ের সাথে কিন্তু তার সাইটেশন বাড়তেই থাকবে। কাজেই, শুধু সাইটেশনের সংখ্যার দিকে না তাকিয়ে আমরা তার সাম্প্রতিক প্রকাশনার দিকে যেতে চাই। এ জন্য তার নামের উপর ক্লিক করে পরের পেইজে গেলাম।
এখানে ড. ওলসনের নাম ও বর্তমান ইউনিভার্সিটির সাথে তার ছবিও দেখা যাচ্ছে। সহজেই মিলিয়ে নিয়ে বোঝা গেল আমরা আসলে সঠিক ব্যক্তির প্রফাইলেই ঢুকেছি। আরো দেখা যাচ্ছে, ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত তার আর্টিকেলটি এ যাবৎকালে সবচেয়ে বেশি সাইটেশন পেয়েছে। আপনি চাইলে এখান থেকেই তার পেপারগুলো পড়তে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, সময়ের সাথে প্রফেসরদের গবেষণার ক্ষেত্র বদলাতে পারে বা অনেক সময় নতুন ইউনিভার্সিটি বা ল্যাবে মুভ করার কারণে অন্য ল্যাবের সাথে কোল্যাবোরেশনের কারণে আরো বিশেষায়িত বা নতুন দিকে মোড় নিতে পারে। সেজন্য আপনাকে Year এর উপর ক্লিক করে ক্রনোলজিক্যাল ক্রমে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত আর্টিকেলগুলো দেখতে হবে।
এখান থেকে বোঝা যাবে তিনি এখন কোন ফিল্ডে কাজ করছেন এবং কেমন পাবলিশ করছেন।
গুগল স্কলারের ডান দিকে দেখবেন গত আট-দশ বছরের বিভিন্ন সময়ে তিনি কত সাইটেশন পেয়েছেন তার একটা বার গ্রাফ রয়েছে।
প্রসঙ্গ h-index: এখানে সাইটেশনের ঠিক নীচেই h-index নামে আরেকটা সূচক রয়েছে। আমেরিকান ইউনিভার্সিটিগুলোতে প্রফেসরদের টেনুরশিপ, মূল্যায়ন বা প্রমোশনের সময় সাইটেশনের চেয়ে h-index এর দিকে বেশি নজর দেওয়া হয়। সাধারণ ভাবে এটা একটা সংখ্যা যা দিয়ে বোঝ যায় আপনার অতগুলো পেপার অত সংখ্যক সাইটেশন পেয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, ড. ওলসনের এ যাবত ২৬টা পেপার আছে যেগুলো কমপক্ষে ২৬ বার সাইট করা হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় কোন প্রফেসর একটা বাম্পার পাবলিকেশন করে শত শত সাইটেশন পান (এবং পেতে থাকেন) কিন্তু পরের গুলো খুবই কম সাইট হয়। সেক্ষেত্রে তার সাইটেশন সংখ্যা বেশি হলেও এইচ ইনডেক্স কম হবে, যা দিয়ে বোঝা যায় তার গবেষণা বা প্রকাশনার চাকা অতটা সচল না।
এইচ ইন্ডেক্স এর বিষয়টা আরো ভালো বোঝা যাবে নীচের এই ভিডিও থেকে:
এবার চলুন জানা যাক এই প্রফেসরের সাথে কো-অথর হিসাবে কারা ছিলেন। এটা জানা খুব একটা জরুরী না, এবং নামের মধ্যে এত বিশাল বৈচিত্র যে সেখান থেকে দরকারী তথ্য বের করা প্রায় অসম্ভব। তার পরেও, অনেক সময় দেখা যায় ইউনিভার্সিটির দুই তিনটা প্রফেসর মোটামুটি একই ধরণের কাজ করে এবং সব সময় এক সাথে পাবলিশ করে (ব্যতিক্রম রয়েছে)। এসব ক্ষেত্রে আপনি আলোচ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একই ডিপার্টমেন্টের আরো কয়েকজন প্রফেসরের নাম পেয়ে যেতে পারেন। তার সাথে কো-অথরদের তালিকা গুগল স্কলারের ডান দিকে পেয়ে যাবেন।
কোন একটা সুনির্দিষ্ট আর্টিকেলের টাইটেলে ক্লিক করলে পরের পেইজে জানতে পারবেন ওই আর্টিকেলের সাইটেশন ও অনলাইন লিংক।
এবং এখানে যে লিংক পাওয়া যাবে সেখান থেকে ওই আর্টিকেলে অ্যাবসট্র্যাক্ট পড়ে নেওয়া যাবে।
এই হলো মোটামুটি গুগল স্কলার থেকে একজন প্রফেসরের রিসার্চ এরিয়া ও সাম্প্রতিক প্রকাশনা জানার উপায়।
- Google Scholar
- Research Area
- Faculty
- Professor