আম্মাকে আব্বা জিজ্ঞাস করতেন, নাঈম কই, আম্মা বলতেন সাইফ্রাস গেছে। আমার মা আজো সাইফুরসকে সাইফ্রাসই বলেন। ল্যাব থাকতো, ক্লাস থাকতো, পরীক্ষা, টিউটোরিয়াল থাকতো তাই শুক্রবারের ক্লাস নেওয়া। কোন তাড়া ছিলো না, ১ম বর্ষ শেষ করে ২য় বর্ষে উঠলাম, এত কিসের তাড়া। একটা ভাষা আয়ত্ত করবো রাতারাতি তো আর হবে না। স্লো আর লং টার্ম প্রসেস। যা কিছু ভালোবেসেছি, এ জীবনে যারই সাহায্য নিয়েছি, তারই স্মৃতি সব সময় সঙ্গে নিয়ে গিয়ে। সাইফুরর্সের ভর্তির রশিদ, ক্লাস রুটিন গুলো আজো আছে পুরাতন ডায়েরিতে।
Writing:
আমাদের সময় পত্রিকাতে ইংরেজী শিক্ষায় আকৃষ্ট করতে সাইফুরস কিছু হাস্যকর বিজ্ঞপ্তি দিতো যেমন ধরুণ: উহ-English এ কাঁশিটা দিলে চাকরিটা হয়ে যেতো!! English=পানি যদি আসেন এখানে, সময় মতো English না শিখলে জীবনটা রানা প্লাজার মতো ধসে যেতে পারে। এসব অনেকের কাছে সত্যি হাস্যকর ছিলো। মূলত আমি আকৃষ্ট হয়েছি এই ধরণের হাস্যকর এড দেখে।
সাইফুর রহমানের একটা ফ্রি ক্লাসে গিয়েছিলাম। তারই পরামর্শে পত্রিকার বিজ্ঞাপন নিয়ে গিয়ে ১৬০০ টাকায় ভর্তি হই Writing নামক একটা কোর্সে সাইফুরর্সের লালমাটিয়া শাখায়। ক্লাসে মোটামুটি ছাত্র সংখ্যা ৩৫ থেকে ৫০। মানে আমার মতো ঢেঁকি আর ডাব ক্লাসে অনেক ছিলো । এই কোর্সটা খুব কাজে দিয়েছে। তখন পর্যন্ত এ জীবনে যা ইংরেজী শিখেছি , সব ইংরেজী গ্রামার রুল্স মোটামোটি রিভিউ করানো হয় এই কোর্সে। কোর্সটি পড়াতেন নোমান স্যার। এই কোর্স মনোযোগ দিয়ে করার কারন হলো যা কিছু বলবো, যা কিছু ভাববো, তা যেন সঠিক বাক্য গঠনের মাধ্যমে মুখে আসে। আর যদি আপনি মনের মধ্যে গঠন করতে না পারেন, তাহলে মুখেই আসবে না আর ভুলে ভরা ইংরেজী বিদেশে আপনার কাছে থেকে কজনে শুনতে চাইবে!! তারপর আমাকে পাঠালেন স্পিকিং কোর্সে। প্রতি শুক্রবারে সকাল ৯ থেকে ১২ অথবা দুপুর ৩ টা থেকে ৬ টা।
আপনি যদি অনার্স প্রথম বা দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হন, আপনি যদি মনে করেন, আপনার কথা গুলো ইংরেজীতে রুপান্তুর করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন, তাহলে এখনই এসব সমস্যা কাটানো উচিত। ২-১ বছর পার হলে আর সময় পাবেন না। কতরকমের টেনশন মাথায় ঝেঁকে বসবে আপনি এসবের চিন্তা ও করতে পারবেন না। একজন বিদেশী প্রফেসরকে ইমেইল করতে আপনার নির্ভুল ইংরেজীতে প্রয়োজন, সঠিক প্রশ্ন সঠিক ভাবে লিখতে হয়। আর বিদেশে না আসলে, আজকাল দেশে ও অনেক চাকরীতে আপনার ইংরেজী জ্ঞান থাকা অনেক জরুরী।
আরেকটা কথা, আমি এটা করেছি, এখানে গিয়েছি, সেখানে গিয়েছি, তাই বলে আপনাকে ও করতে হবে এমন কোন কথা নাই। যেভাবেই পারেন সমস্যা সমাধান করতে পারেন।
আর্টিকেলটির পরবর্তী পর্ব পড়তে এখানে এবং ২য় পর্ব পড়তে ক্লিক করুন
– Rejaul Hoq Nayem, Teaching Assistant (TA) at Purdue University
নিচের লিংক থেকে রেজাউল হক নাঈমের লেখা অন্যান্য আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন-
☑ উচ্চশিক্ষা, স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বাধা, উত্তরণ ও করণীয় (পর্ব- ১)
☑ উচ্চশিক্ষা, স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বাধা, উত্তরণ ও করণীয় (পর্ব- ২)
☑ উচ্চশিক্ষা, স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বাধা, উত্তরণ ও করণীয় (পর্ব- ৩)
☑ উচ্চশিক্ষা, স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বাধা, উত্তরণ ও করণীয় (পর্ব- ৪)
☑ উচ্চশিক্ষা, স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বাধা, উত্তরণ ও করণীয় (পর্ব- ৫)