বিষয় : ইংরেজী ভাষায় দক্ষতা অর্জন (অনার্স ১ম, ২য়, ৩য় বর্ষ, সময়টাকে কাজে লাগান)। অনেকে ছোট করে লিখতে বললেন, তাই ছোট করে লিখলাম, এর চেয়ে ছোট হলে মনের ভাব পূর্ণরূপে প্রকাশ করা যাবে না।

একজন বুয়েটের ছাত্র এই লেখা পড়ে হাসবে। হয়তো বলবেন ইংরেজী শিখতে এত যুদ্ধ তাহলে বাকী কাজ কখন করবে!!!

একটা সময় ছিলো যখন ভাবতাম উচ্চশিক্ষা মানেই হলো শুধু দেশের বাহিরে পড়াশোনা করা। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে যখন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স বা মাষ্টার্স করি, সেটাও উচ্চশিক্ষার আওতাধীন। তবে, বিভিন্ন শিক্ষাবিদদের আলোচনায়, মাঝে মাঝে পত্রপত্রিকায় উচ্চ-মাধ্যমিক লেভেলকে ও উচ্চশিক্ষা বলে অভিহিত করা হয়। আমাদের দেশীয় উচ্চ শিক্ষা শেষ করে ও আমরা যে সঠিক ভাবে ইংরেজীতে কথা বলতে পারি না, নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে কিভাবে দেশের বাহিরে পড়াশোনা বা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করার যোগ্যতা এবং নিত্যনৈমিত্তিক চলা ফেরার জন্য একজন অনার্সের ১ম, ২য়, ৩য় বর্ষের ছাত্র কিভাবে নিজেকে আস্তে আস্তে ইংরেজীতে যোগ্য করে তুলতে পারেন সেই নিয়ে আজকের বিনোদন:

Saifur Rahman Khan!!! নিজেকে সব সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। আর দ্বিতীয় পরিচয় সাইফুরস নামক একটা ইংরেজী কোচিং সেন্টারের মালিক। আমার কাছে কখনই এটাকে কোচিং সেন্টারের মতো লাগেনি। আমার মতো কতো ছাত্র ইংরেজী শিখেছে এখানে। আমার কাছে এটা ইংরেজীর জন্য প্রাইমারী স্কুলের মতো মনে হয়।

অনার্স লাইফের ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল, ২-৩ বছর, সাইফুরসের লালমাটিয় ব্রাঞ্চে স্পিকিং ক্লাব দিয়ে ইংরেজী শিখা শুরু। জাহাঙ্গীরনগর থেকে লালমাটিয়া, রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি, ১ টাকা বাস ভাড়া, ৫ টা থেকে ৭টা, ট্রাফিক জ্যাম তারপর আবার শুক্র বারে স্পিকিং ক্লাবের এক আফ্রিকান ফরেনারের সাথে সপ্তাহে ১৫মিনিটের স্পিকিং, নোমান স্যার, শফিক স্যার, মাজহার স্যার। কি যে কষ্টের দিন ছিলো। প্রায়ই মনে পড়ে। আপনার হয়তো এত কিছু লাগবে না। আপনি হয় এমনিতেই ইংলিশে ভালো।

শুরু যেখানে

মেট্রিক, ইন্টারে আমার ইংরেজীতে “এ মাইনাস”। গ্রেড একেবারেই খারাপ না, তাই না? কিন্তু বাস্তবে কিন্তু পুরাই ডাব। কেন ডাব বলতেছি, এবার শুনেন কাহিনী। ইলিয়াস মোল্লা স্যার একদিন ২য় বর্ষে জৈব রসায়ন পড়াচ্ছেন, হঠাৎ আলোচনার প্রেক্ষিতে tiny tiny particle তিনটি শব্দ উচ্ছারণ করলেন। আমি অনার্সের ছাত্র হিসাবে বাস্তবে tiny এর অর্থ জানা উচিত ছিল। আমি বীরের মতো প্রশ্ন করে ফেলেছি স্যার tiny মানে কি? স্যার খুব রাগ করলেন। রাগ করারই কথা। বললেন আমি তোমারে এখন ইংরেজী শিখাতে পারবো না। নিজের উপর আমি নিজেই বিরক্ত । কামাল উদ্দিন হলের ২৩৩ নাম্বার রুমে থাকতেন রসায়ন ৩২ ব্যাচের নাজমুল ভাই আর বাংলা ৩৩ ব্যাচের রনি ভাই। মাঝে মাঝে আড্ডা দিতে যেতাম। আমার কাহিনী শুনে বলেন ব্রিটিশ কাউন্সিলে যাও । আর প্রথম আলোতে এড দেয় সাইফুরসে ও যাইতে পারো।

ফুলার রোডে ব্রিটিশ কাউন্সিলের অফিসে গেলাম । এক ভদ্র লোক, ইংরেজীতে ব্যাপক উড়াধূড়া। কথাই বুঝি না। বহুত কষ্টে বুঝালাম আমার কি দিয়ে শুরু করা উচিত? তারা সাজেষ্ট করলো Phonetics (উচ্চারণ) দিয়ে শুরু করতে। ৬০০০ টাকা দিয়ে ভর্তি হইলাম। মূলত এটা ছিল ভুল সিদ্ধান্ত।

আমারে কেউ গুলি করলেও আমার মুখ দিয়ে ইংরেজী তে উহ-আহ ছাড়া কোন শব্দ বেরোয় না, সেই আমি ফোনেটিক্স দিয়া কি করবো। আর মুখ দিয়ে কথা বের না হলে উচ্চারন করবো টা কি? আর সেই ক্লাসে কোন বাংলা নাই, ব্রিটিশ লোক, আশেপাশের লোক গুলোও কেমন জানি কাটখোট্টা টাইপের, পুরা পন্ডিট টাইপের, কোন রকম কোন কথাবার্তা নাই। মজা পেলাম না । ব্রিটিশ কাউন্সিল বাদ।

আর্টিকেলটির পরবর্তী পর্ব এখানে এবং ১ম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন

 

– Rejaul Hoq Nayem, Teaching Assistant (TA) at Purdue University


নিচের লিংক থেকে রেজাউল হক নাঈমের লেখা অন্যান্য আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন-

 উচ্চশিক্ষা, স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বাধা, উত্তরণ ও করণীয় (পর্ব- ১)
 উচ্চশিক্ষা, স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বাধা, উত্তরণ ও করণীয় (পর্ব- ২)
 উচ্চশিক্ষা, স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বাধা, উত্তরণ ও করণীয় (পর্ব- ৩)
 উচ্চশিক্ষা, স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বাধা, উত্তরণ ও করণীয় (পর্ব- ৪)
 উচ্চশিক্ষা, স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বাধা, উত্তরণ ও করণীয় (পর্ব- ৫)