চারটি স্কিল বাড়াবার জন্য সাধারণ কিছু স্ট্র্যাটিজির কথা বলছি। দুঃখজনকভাবে কোন ম্যাজিক মেথড বা শর্টকাট আমার জানা নেই।
দক্ষতা বাড়ানোর জন্য (বিশেষ করে নানান পরীক্ষার জন্য নিজেকে দক্ষ করতে যে রিডিং স্কিল প্রয়োজন হয় সেটার জন্য) অনলাইন নিউজপেপারের এমন আর্টিকেল এবং তার কমেন্ট পড়বেন যেগুলোতে অ্যানালাইসিস থাকে। যেমন পলিটিক্যাল নিউজগুলো। মিডিয়া গসিপ এবং স্পোর্টস এভয়েড করাই ভালো, কারণ এগুলোতে শুধু ইনফরমেশন থাকে, মাথা খাটাবার বা ভাবার কিছু থাকে না। বই পড়ার সময়ও এমন কিছু চয়েজ করুন। যদি আগে কোন বই পড়ার অভ্যেস না থাকে তাহলে ফাস্ট-পেইসড কিছু থ্রিলার পড়ে অভ্যাসটা গড়তে হবে, তারপর একটু ভারী বইয়ের দিকে যেতে হবে। নাম ধরে না পড়ে যেকোনো বই নিয়মিত পড়াটাই কাজে দেবে। অত্যন্ত বিরক্তিকর এবং আপনার কম্ফোর্ট জোনের বাইরের টপিকগুলো যদি পড়ে বুঝতে পারেন, তাহলেই বুঝবেন আপনার স্কিল বেড়েছে।
মুভি, টিভি সিরিজ ইত্যাদি কাজে দেবে। তবে ভালো শব্দ বুঝতে হলে এমন কিছু দেখতে হবে যেখানে ভালো শব্দ ইউজ হয়। স্পিকিং ইংলিশ এবং ওয়ার্কিং এনভায়রনমেন্ট ইংলিশ কিছুটা আলাদা, এটা দেখতে দেখতে বুঝবেন। যেমন, টিভি সিরিজ হিসেবে অন্যান্য সিটকমের চেয়ে Big bang theory তে কিছু ক্যারেক্টারের ডায়ালগে এমন কিছু ওয়ার্ড পাবেন যেটা আপনার লিসনিং স্কিল এবং ভোকাবুলারি দুটোই বাড়াবে। সাবটাইটেল অফ করে দেখবেন। শুরুতে কষ্ট হবে, কিন্তু এটাই উপকার করবে। লিসনিং স্কিল বাড়াবার জন্য মনে রাখতে হবে, একটা একটা করে শব্দ বোঝার চেষ্টা না করে কনভারসেশনটা কী নিয়ে হচ্ছে, তারা কেমন মুডে আছে, কীভাবে কথা বলছে এগুলো খেয়াল করা জরুরী। তাহলেই একটা সময় শব্দগুলোও ধরতে পারবেন। টক শো এবং নিউজ দেখার চেষ্টা করবেন। খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল তাদের উচ্চারণ খেয়াল করা, বাঙালি ভুলভাল উচ্চারণ ত্যাগ করা এতে সহজ হবে।
একটা নির্দিষ্ট টপিক বাছাই করে পাঁচ মিনিট নিজে নিজে বলার চেষ্টা করবেন পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই। শুরুতে হোঁচট খাবেন, কিন্তু ধীরে ধীরে বলার অভ্যেস বাড়বে। এখানেও নিজের শব্দচয়ন এবং উচ্চারণ ডেভেলপ করবেন।
স্পিকিং হল চারটি স্কিলের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটিতেই আমরা সবচেয়ে দুর্বল। আমরা চিন্তা করি বাংলায়, তারপর সেটিকে ইংরেজিতে মনে মনে অনুবাদ করি, তারপর সেটিকে ভুলভাল উচ্চারণ আর গ্র্যামারসহ প্রেজেন্ট করি! এটি বাদ দিয়ে যদি চিন্তাটুকুও ইংরেজিতে করতে পারেন, তাহলে দ্রুত এবং নির্ভুল বলতে পারবেন।
একটা নির্দিষ্ট টপিক বাছাই করে পাঁচ মিনিট সেটার ওপর লেখার চেষ্টা করবেন। শুরুতে লেখা বাচ্চাদের মত হবে, লেখা বেরুবে না, বাক্যগুলোও ছোট ছোট হবে। ধীরে ধীরে জটিল করে ম্যাচিউর লিখতে পারবেন। সেন্টেন্সের স্ট্রাকচার গঠন করতে পারবেন, কমপ্লেক্স এবং কম্পাউন্ড সেন্টেন্স ব্যবহার করতে পারবেন এবং জটিল ভোকাবুলারিও বাড়াতে পারবেন।
সঠিক বানান পড়ার অভ্যেস পড়তে পড়তে হয়। আর সঠিক বানান লেখার অভ্যেস লিখতে লিখতে হয়। সঠিক বানান লিখতে লিখতে আপনার চোখ এবং ব্রেইন সঠিক এবং ভুলের পার্থক্য করতে পারবে। কাজেই লেখার চেষ্টা করুন স্পেল চেকার ছাড়া, তারপর কষ্ট করে মিলিয়ে নিন। আজকাল ফেসবুকে বা অনলাইনে অনেকে ভুল বানানে লেখায় অভ্যস্ত, এটির দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হল এই যে একটা সময় অনেকে আর জানবেও না কোনটা ঠিক বানান আর কোনটা ভুল বানান – কারণ সঠিকটা না দেখতে দেখতে ব্রেইন আর ধরতে পারবে না।
ইংলিশ স্কিল বাড়ানোর জন্য ইউটিউব আর গুগল তো আছেই। ভালো কোন বই পড়তে হলে, একটু সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। অনলাইন ম্যাটেরিয়াল ফলো করার চেয়ে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টাটা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বেশীরভাগ মানুষ অনলাইন রিসোর্স শুধু ডাউনলোড করে আর জমা করে, সেগুলো কাজে লাগায় খুব কম। শর্ট টার্ম ৩০ দিনের ক্র্যাশ অর বুলেট কোর্স ফলো না করে লং টার্ম চেষ্টা করলে, এবং নিয়মিত চর্চা করতে থাকলে একটা সময় ভয় আর থাকবে না। সবসময়ই মনে রাখবেন আপনি পুরোটা কখনোই শিখে ফেলতে পারবেন না, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত (অথবা পরীক্ষার আগের দিন পর্যন্ত!) শিখতে থাকতে হবে। একজন ভালো খেলোয়াড়ের উদাহরণ দেয়া যায়। সে কিন্তু আমাদের মতই একজন সাধারণ মানুষ, পার্থক্য হল এই যে, তার খেলাটির প্রতি আগ্রহ আছে আর যদিও সে ভালো খেলোয়াড়, তারপরও প্রতিদিন তাকে প্র্যাকটিস করতে হয়।
আশা করি উপকার হবে। ধন্যবাদ।
– ইসহাক খান, প্রাক্তন গ্রেক ফ্যাকাল্টি
নিচের লিংক থেকে ইসহাক খানের লেখা অন্যান্য আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন-
☑ স্টুডেন্টদের সাধারণ দুর্বলতা – পার্ট ১ – Vocabulary
☑ স্টুডেন্টদের সাধারণ দুর্বলতা – পার্ট ২ – Analytical Writing
☑ স্টুডেন্টদের সাধারণ দুর্বলতা – পার্ট ৩ – Reading Comprehension
☑ স্টুডেন্টদের সাধারণ দুর্বলতা – পার্ট ৪ – Speaking (TOEFL)
☑ Originality of writing: এসওপি, এলওআর, ইমেইলিং প্রফেসরস, সিভি ও রেজুমে (১ম খণ্ড)
☑ Originality of writing: এসওপি, এলওআর, ইমেইলিং প্রফেসরস, সিভি ও রেজুমে (২য় খণ্ড)
☑ Customized Routine: নিয়মিত ফলো করা (১ম খণ্ড)
☑ Customized Routine: নিয়মিত ফলো করা (২য় খণ্ড)
☑ আমার জন্য সঠিক রাস্তা কোনটা: বিদেশ, জিআরই, স্বদেশ, বিসিএস, চাকরি?
☑ রেকমেন্ডেশন বিড়ম্বনা!
☑ Research: রিসার্চ বা গবেষণা
☑ ইউএস অ্যাম্বেসির ভেতরের পরিবেশ এবং স্টেপগুলো
☑ ইংরেজিতে দক্ষতা এবং কিছু স্ট্র্যাটিজি
☑ Teaching: শেখা ও শেখানো, দেয়া ও নেয়া
☑ ইউএস ভিসা পাওয়া না পাওয়া এবং হায়ার স্টাডির কিছু পয়েন্ট
☑ জিআরই এবং টোফেল: হায়ারস্টাডির প্রস্তুতি হোক স্ট্র্যাটিজিক্যালি (পার্ট- ১)
☑ জিআরই এবং টোফেল: হায়ারস্টাডির প্রস্তুতি হোক স্ট্র্যাটিজিক্যালি (পার্ট- ২)
☑ জিআরই এবং টোফেল: হায়ারস্টাডির প্রস্তুতি হোক স্ট্র্যাটিজিক্যালি (পার্ট- ৩)
☑ জিআরই এবং টোফেল: হায়ারস্টাডির প্রস্তুতি হোক স্ট্র্যাটিজিক্যালি (পার্ট- ৪)
☑ আমার অভিজ্ঞতা: জিআরই প্রস্তুতি এবং পরীক্ষা
☑ আমার অভিজ্ঞতা: টোফেল প্রস্তুতি এবং পরীক্ষা
☑ আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা এবং দরকারি কৌশল